কালবৈশাখী ঝড় ও শিলা বৃষ্টিতে নাটোরের গুরুদাসপুর, লালপুর ও সিংড়া উপজেলায় উঠতি বোরো ধান, আম, তরমুজ এবং লিচু সহ অন্যান্য ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া অসংখ্য গাছা-পালা ভেঙ্গে পড়েছে, কোথাও কোথাও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বুধবার বিকেল সাড়ে ৫ টা থেকে শুরু করে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে ঝড় আর শিলাবৃষ্টি। পরে সাড়ে আটটার দিকে ফের শিলা বৃষ্টি হয়। বিশেষ করে জেলার গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুর, বিয়াঘাট, খুবজিপুর ও ধারাবারিষা ইউনিয়নের অন্তত ২০টি গ্রাম এবং সিংড়া উপজেলার চামারী ইউনিয়নের বিলদহর সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের ওপর দিয়ে ঝড় ও শিলা বৃষ্টি হয়।
দীর্ঘক্ষণ ধরে শিলা বৃষ্টি হওয়ার কারণে এসব এলাকার উঠতি বোরো ধান, আম, তরমুজ এবং লিচুর ব্যাপক ক্ষতি হয়ে বলে জানা গেছে। দফায় দফায় শিলা বৃষ্টির কারণে ক্ষতির মুখে পড়েছে আম ও লিচু বাগান মালিকরা।
সিংড়ার বিলদহর গ্রামের কৃষক ফরিদুল ইসলাম জানান, শিলা বৃষ্টির কারনে তাদের এলাকার অধিকাংশ কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। প্রতিবিঘা ধানের উৎপাদন গত বারের তুলনায় কম হবে। তিনি বলেন, আকাশে সামান্য মেঘ হলেই মানুষ আতঙ্কিত পড়েন। কারন চলনবিলের কৃষকের প্রায় ৮০ ভাগ বোরো ধান পেকে গেছে। ঘরে সময় মত ধান তুলতে পারবে কিনা তা নিয়ে কৃষকরা আতঙ্কিত আছেন। তাই অনেকেই প্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকে রক্ষা পেতে আগেই আধা-পাকা ধান কেটে নিচ্ছেন।
গুরুদাসপুরের প্রবীন সাংবাদিক অধ্যাপক আতহার আলী স্থানীয় আম বাগান মালিক ও লিচু চাষীদের বরাত দিয়ে জানান, শিলা বৃষ্টির কারনে আম, লিচু ও তরমুজের বেশ ক্ষতি হয়েছে। এতে এবার ফলন কম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি বলেন, ব্যবসার উদ্দেশ্যে যারা আম ও লিচুর বাগান কিনেছেন তাদের মধ্যে আতঙ্কটা বেশী। অনেকে টাকাই তুলতে পারবেন না বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। আম ও লিচু চাষীরা বলছেন, এবার তাদের লোকসান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
নাটোর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ রফিকুল ইসলাম জানান, কি পরিমান ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা এখনো জানা যায়নি। তবে ক্ষয়ক্ষতি নিরুপনের জন্য কৃষি কর্মকর্তারা রাতেই খোঁজ খবর নিতে কাজ শুরু করেছেন। বৃহস্পতিবার হাতে রিপোর্ট পেলেই কেবল ক্ষয়ক্ষতির আসল খবর পাওয়া যাবে। শিলা বৃষ্টিতে উঠতি বোরো ধান, লিচু ও ধানের কিছুটা ক্ষতি হবে। সার্বিক উৎপাদনে তেমন বিরুপ প্রভাব পড়বে না।
নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর জিএম নিতাই কুমার সরকার জানান, ঝড়ের কারনে কিছু কিছু এলাকায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে, তা রাতেই মেরামত করে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হবে। তাদের লোকজন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় কাজ করছেন।

Comments
Post a Comment