তিন দিনেও নিজেদের ছাত্রের খোঁজ নেননি এন এস কলেজ কর্তৃপক্ষ



নিজস্ব প্রতিবেদক,নাটোর
নাটোর এন এস সরকারী কলেজের নবীনবরণ উৎসবে যোগ দিতে গিয়ে রডের গুতোয় নি¤œাঙ্গে গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত চতুর্থ বর্ষের ছাত্র মাহবুব হোসেন মধুর আস্ত্রোপচার করা হয়েছে। রবিবার দিবাগত রাত ১২টায় রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মধুর অস্ত্রোপচার করা হয়। এর আগে মধুর অস্ত্রোপচারের জন্য ৬ সদস্যের একটি মেড্যিকাল বোর্ড গঠন করা হয়।
বোর্ডের চিকিৎসকরা জানান, আপাতত মলমুত্র ত্যাগের জন্য বিকল্পভাবে একটি মলদ্বার ও একটি মুত্রনালী তৈরী করে দেয়া হয়েছে। মধুর আরো উন্নত ও দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসা, বিশ্রাম ও যতœ প্রয়োজন। তবে দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসার পরও স্বাভাবিক জীবনে প্রবেশ করতে পারবে না মধ।
এদিকে মধুর বড় ভাই খোরশেদ আলম জানিয়েছে, চিকিৎসা করাতে যে অর্থ দরকার তা, পরিবারের পক্ষে যোগান দেয়া সম্ভব না। মধুর অনাগত ভবিষ্যত নিয়ে আমরা চিন্তিত।
এদিকে ঘটনার দুইদিনেও মধুর চিকিৎসার ব্যাপারে কোন খোঁজখবর নেয়নি এন এস সরকারী কলেজ কর্তৃপক্ষ।
মধুর মা মরিয়ম বেগম খুশি সাংবাদিকদের জানান, মধুর চিকিৎসার জন্য এখন অর্থের প্রয়োজন। পরিবারের একার পক্ষে চিকিৎসার ব্যয়ভার মেটানো সম্ভব না। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত কলেজের কোন শিক্ষক তার ছেলের খোঁজ নেননি। 
এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর সামসুজ্জামান সোমবার সন্ধ্যায় এ প্রতিবেদককে জানান, তিনি ঢাকায় অবস্থান করায় তার পক্ষে মধুর খোঁজ নেয়া সম্ভব হয়নি। তিনি নাটোরে ফিরে মধুর চিকিৎসার ব্যাপারে খোঁজ করবেন।
আহত মধুর বাড়ি নাটোরের ব্রক্ষপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান বাবু জানান, ‘এ ঘটনার পর থেকে ছেলের মধুর মা বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন আদরের সন্তানের সুচিকিৎসা ও ভবিষ্যত নিয়ে। ক্ষোভের বিষয় ঘটনার তিনদিন পেরলেও কলেজ কর্তৃপক্ষের কোন প্রতিনিধি সহায়তা দূরে থাক, খোঁজ নেয়ার প্রয়োজন মনে করেনি। জানতে পেরেছি কলেজের অধ্যক্ষ ও মধুর বিভাগের প্রধান এখনও ঢাকায় অবস্থান করছেন। তবে এ বিষয়ে স্থানীয় একটি পত্রিকার সম্পাদক মধুর কলেজের অধ্যক্ষের সাথে যোগাযোগ করলে তারা জানিয়েছেন ঢাকা থেকে ফিরে মধুর পরিবারের সাথে যোগাযোগ করবেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত শনিবার এন এস সরকারী কলেজের নবীনবরণ উৎসবের সাংস্কৃতিক পর্ব শুরু হলে তাড়াহুড়ো করে যাবার সময় মাহবুব কলেজ গেইটের সামনে নির্মাণাধীন ড্রেন পার হতে গিয়ে রডের উপর পড়ে যায়। এতে তার নি¤œাঙ্গে রড ঢুকে যায়। এতে সে গুরুতর আহত হয়। এসময় সহপাঠীরা তাকে দ্রুত উদ্ধার করে নাটোর সদর হাসপাতাল ও পরে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। চিকিৎসকরা জানান, রডের গুতোয় তার মুত্রনালী রগ ছিড়ে গেছে। আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে অনুষ্ঠিত অনার্স শেষ বর্ষের পরীক্ষা দিতে পারবে না সে।

Comments