নাটোরে ধর্ষিত সেই শিশুটিকে ‘মানসিক রোগী’ বানালেন চিকিৎসক!

                             


নিজস্ব প্রতিবেদক, নাটোর॥
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলায় চতুর্থ শ্রেণির সেই ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় যতই দিন যাচেছ ততই বেরিয়ে আসছে প্রস্তুতকৃত মেডিক্যাল রিপোর্টের নানা অসঙ্গতি। মেডিক্যাল রিপোর্টে ধর্ষিত শিশুটিকে মানসিক রোগী হিসেবে উল্লেখ করেন বড়াইগ্রাম উপজেলা কমপ্লেক্সের আরএমও ডাঃ ডলি রানী। 
তবে স্পর্শকাতর এ রিপের্টের বিষয়ে কথা বলতে রাজি নন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাও। আদালতের বাইরে কথা বলবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন তিনি।
ওই ছাত্রীর পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়,  গত ২৪ জানুয়ারি বনপাড়া পৌরসভার বাসিন্দা ওই শিশুকে এসএসসি পরীক্ষার্থী মাহবুর রহমান সাইকেল চালানোর কথা বলে ডেকে নেয়। সাইকেল চালানোর পর চকলেট দেওয়ার কথা বলে ঘরে নিয়ে শিশুটিকে ধর্ষণ করে সে। অসুস্থ অবস্থায় শিশুটিকে সেদিনই বড়াইগ্রাম স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। তার বাবা অভিযোগ করেন, ২৫ জানুয়ারি তার মেয়ের মেডিকেল পরীক্ষা করা হলেও রিপোর্টে দেখানো হয়েছে ২৪ জানুয়ারি। এছাড়া রিপোর্টে তার মেয়েকে মানসিক রোগী দেখানো হয়েছে।
তবে ‘ধর্ষণের’ শিকার শিশুটি মানসিক রোগী নয় বলে দাবি করেন তার স্কুলের প্রাথমিক বিদ্যালয় শাখার প্রধান শিক্ষিকা। এ বিষয়ে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। 
মেডিকেল রিপোর্ট নিয়ে বিভিন্ন পক্ষের দ্বিমতের বিষয়ে কথা বলতে গেলে বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা পরিতোষ কুমার রায় জানান, তারা আদালতের বাইরে কারো সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবে না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহরিয়ার খান জানান, ঘটনার দিনই ওই শিশুর বাবা থানায় একটি মামলা করেন। ২৪ তারিখ রাতেই অভিযুক্ত মাহবুবকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে আদালতের মাধ্যমে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়। গত ৩০ জানুয়ারি তার এসএসসি পরীক্ষার কথা বিবেচনা করে আগামী ২৪ মার্চ পর্যন্ত জামিন দেয় আদালত।
শাহরিয়ার খান আরও জানান, ধর্ষণের সময় শিশুটির পরনের পোশাক পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। ঢাকার রিপোর্ট পাওয়ার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে।
এদিকে অভিযুক্ত মাহবুবের বাবার সঙ্গে যোগযোগ করা হলে তিনি জানান, তিনি ঘটনার দিন বাড়িতে না থাকায়, কী ঘটেছিলো তা জানেন না। এ সময় মাহবুবেব বাড়িতে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি।
অপর দিকে জামিনে মুক্তি পেয়ে মাহবুব ‘ধর্ষণের’ শিকার শিশুর পরিবারকে হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন শিশুটির মা।


Comments