নাইমুর রহমান
শিক্ষক সংকট, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তাহীনতা, ক্যাম্পাসে একাডেমিক কার্যক্রমে বিশৃঙ্খলাসহ বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমে সংবাদ হয়েছে নাটোররে ঐতিহ্যবাহী নবাব সিরাজ-উদ্-দৌলা (এন এস) সরকারী কলেজ। কলেজ কর্তৃপক্ষ বরাবরই এসব বিষয়ে তাদের উদাসীনতার কথা অস্বীকার করে গেছে। তবে এবার খোদ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা কলেজে এসে অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষকে না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন । তবে বরাবরের মতো অভিযোগটি অস্বীকার করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. মোল্লা জালাল উদ্দীন গত শনিবার (২৭ জানুয়ারী) দুপরে রাজশাহী থেকে ঢাকা ফেরার পথে নাটোর এন এস সরকারী কলেজে প্রবেশ করেন। এসময় কলেজের কয়েকজন শিক্ষক তাকে দেখে ছুটে আসেন। এ সময় তিনি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর সামসুজ্জামান ও উপাধ্যক্ষ নূর কুতুব-উল-আলমের খোঁজ করেন। উপস্থিত শিক্ষকরা সচিবের প্রশ্নের যথাযথ উত্তর দিতে না পারলে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং চলে যান।
ওই সময় উপস্থিত এক কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই প্রতিবেদককে জানান, সচিব স্যার প্রিন্সিপাল স্যারকে না পেয়ে একাই কলেজের নির্মানাধীন শহীদ মিনার পরিদর্শন করে চলে যান।
এ ব্যাপারে কলেজের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান কাজী ইসমাইল হোসেন অতিরিক্ত সচিবের কলেজ ক্যাম্পাসের আসার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ‘সচিব স্যারকে বহন করা গাড়িতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের লোগো দেখে আমি ছুটে যাই এবং সচিব স্যারকে চিনতে পারি। এ সময় তিনি অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষের খোঁজ করেন। তারা দাপ্তরিক কাজ ও মিটিংয়ে ব্যস্ত আছেন বলে জানালে তিনি চলে যান। তবে, কলেজের এক পিয়নের কাছে জানতে পেরেছি সচিব স্যার নির্মাণাধীন শহীদ মিনার একাই পরিদর্শন করেছেন।’
এদিকে স্থানীয় সচেতন মহলের অভিযোগ, নাটোর সহ সারাদেশে যখন বেসরকারী কলেজ সহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মবিরতী কর্মসূচী চলছে , সেখানে একটি সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ ও উপাধক্ষের কর্মস্থলে অনুপস্থিতি গ্রহণযোগ্য হয় কিভাবে।
এ বিষয়ে জানতে উপাধ্যক্ষ নূর কুতুব-উল-আলমের সঙ্গে তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর সামসুজ্জামান বরাবরের মত কলেজে অনুপস্থিত থাকার অভিযোগও অস্বীকার করে বলেন, ‘ আমি শনিবার একটি জরুরী মিটিং এ ছিলাম। আমার আমন্ত্রণেই অতিরিক্ত সচিব ড. মোল্লা জালাল উদ্দীন কলেজের নির্মাণাধীন শহীদ মিনার দেখতে কলেজে আসেন। তিনি শহীদ মিনার দেখে যথারীতি চলে গেছেন। তার উপস্থিতির কোন প্রয়োজন ছিলনা। ক্ষোভ প্রকাশের কিছুই নাই। পরিদর্শনের সময় অনান্য শিক্ষকরা তার সাথে ছিলেন।’ তবে কোথায় মিটিং করছিলেন জানতে চাওয়া হলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।

Comments
Post a Comment